ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদ-ের আইন চায় জামায়াতের ‘মহিলা বিভাগ’
- আপলোড সময় : ১৬-০৩-২০২৫ ১২:৫৮:২৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-০৩-২০২৫ ১২:৫৮:২৮ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ধর্ষণ মামলায় কারাদ-ের বিধান বাতিল করে শুধু মৃত্যুদন্ডের বিধান এবং ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘মহিলা বিভাগ’। শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে ৫ দাবি’তে এবং শিশু আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন ‘বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও’, ‘ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দিবি, দিতে হবে’- সহ নানান স্লোগান তুলে সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক নুরন্নিসা সিদ্দিকা বলেন, আছিয়া হত্যা মামলার রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে এবং আসামিদের মৃত্যুদ- দিতে হবে। সব ধর্ষককে ফাঁসি দিতে হবে।
‘ধর্মহীনতার চর্চা’ এবং ‘নৈতিকতাহীন শিক্ষা’ মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে জনগণকে উজ্জীবিত করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্ষণ মামলায় কারাদ-ের বিধান বাতিল করে শুধুমাত্র মৃত্যুদ-ের (ফাঁসি) বিধান করতে হবে। ধর্ষকরা যুগে যুগে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণেই সমাজ থেকে ধর্ষণ নামক ব্যাধি দূর করা যায়নি।
ধর্ষককে তার নিজ এলাকায় জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়ারও দাবি জানান অধ্যাপক নুরুন্নিসা। তিনি বলেন, এতে করে পরবর্তী সময়ে কেউ ধর্ষণের অপরাধ করার সাহস পাবে না।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নি®পত্তি করার এবং জামিন বিধান বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা এই ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই। শিশু আছিয়াকে শুধু ধর্ষণ করা হয়নি, হত্যাও করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সরকারের ঘোষণা ও আমাদের ৫ দাবির আলোকে বিচার করতে হবে। নইলে নারী সমাজ কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী, শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা দ্রুত বিচার আইনে ধর্ষকদের বিচার করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণের ঘটনা সমাজে বিস্তার করেছে। ছাত্র লীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করেছে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তার বিচার করেনি। এতেই স্পষ্ট আওয়ামী লীগ ধর্ষণের বিস্তার ঘটিয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমথর্নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের কাছে নারী সমাজের ৫ দাবি তুলে ধরার অর্থ হচ্ছে সরকারকে জনস্বার্থে ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে প্রয়োজনীয় কাজ দেখিয়ে দেওয়া। সরকার এই ৫ দাবি বাস্তবায়ন না করলেই নারী সমাজকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আগে মানুষের নৈতিকতার সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধীরা বেরিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না আসলে রাষ্ট্র সংস্কারের সুফল পাওয়া যাবে না।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নাজমুন্নাহার নীল বলেন, সমাজে মূল্যবোধ আর নৈতিকতার অভাব। তাই আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার কোনও উপাদান নাই। শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নামার কারণেই সমাজের আজ করুণ পরিণতি। আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী বিগত ১০ বছরে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ধর্ষণের মামলা হলেও একটি মামলারও বিচার হয়নি। তিনি সব ধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচার আইনে নি®পত্তি করে ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারী সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য রোজিনা আখতার, আয়েশা সিদ্দিকা পারভীন, সালমা সুলতানা, ইরানি আখতার, মাহবুবা জাহান, খোন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা, সুফিয়া জামালসহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতারা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ